বারানসী বোমা বিস্ফোরণ মামলার মূল চক্রী ওয়ালিউল্লাহ খানের মৃত্যুদণ্ডের সাজা

২০০৬ সালের বারাণসী বিস্ফোরণ মামলায় Varanasi bomb blast দোষী সাব্যস্ত সন্ত্রাসবাদী ওয়ালিউল্লাহ খানকে মৃত্যুদণ্ড দিল উত্তর প্রদেশের গাজিয়াবাদ জেলা আদালত। গত শনিবার (৪ জুন) ওই নাশকতার ঘটনার দুটি মামলায় ওয়ালিউল্লাহ খানকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল আদালত। অপর এক মামলায় প্রমাণের অভাবে তাকে খালাস দিয়েছিলেন বিচারক।
২০০৬ সালের ৭ মার্চ, বারানসীর সঙ্কটমোচন মন্দির এবং বাারনসী ক্যান্টনমেন্ট রেলওয়ে স্টেশনে দুটি বোমা বিস্ফোরণের ফলে মোট ২০ জন নিহত হয়েছিলেন। ওই ঘটনায় আরও ১০০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছিলেন। কী ঘটেছিল ২০০৬ সালের ৭ মার্চ? প্রথম বিস্ফোরণটি ঘটেছিল সন্ধ্যা ৬টা বেজে ১৫ মিনিট নাগাদ। সঙ্কটমোচন মন্দিরের ভিতরেই ওই বিস্ফোরণ ঘটেছিল।
সেই ঘটনার আকস্মিকতা কাটতে না কাটতেই, ১৫ মিনিট পরই পরের বিস্ফোরণটি ঘটেছিল বারাণসী ক্যান্টনমেন্ট রেলওয়ে স্টেশনে। স্টেশনের প্রথম শ্রেণীর বিশ্রাম কক্ষের বাইরে বিস্ফোরণ ঘটেছিল। দু’দুটি বিস্ফোরণের পর, আরও বোমা থাকতে পারে সন্দেহে বারানসীর বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালিয়েছিল পুলিশ। তাতেই, তৃতীয় একটি বোমার সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল রেলক্রসিংয়ের কাছের এক থানায়।
সেটি ছিল একটি কুকার বোমা। ওই বছরের এপ্রিল মাসেই এই ঘটনার তদন্তের জন্য একটি টাস্ক ফোর্স গঠন করা হয়েছিল। তদন্তকারীরা দাবি করেছিলেন, ওই বোমা বিস্ফোরণের মূল ষড়যন্ত্রী ছিল ওয়ালিউল্লাহ খান। সেই কুকার বোমা ব্যবহার করে বারানসীর ব্যস্ততম এলাকাগুলিতে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক তৈরি করতে চেয়েছিল।
তদন্তকারীরা আরও বলেছিলেন, ওয়ালিউল্লাহ খানের সঙ্গে যোগ ছিল বাংলাদেশী সন্ত্রাসবাদী সংগঠন হরকত-উল-জেহাদ আল ইসলামি। বারাণসীর আদালতে এই মামলার শুনানি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, বারানসী আদালতের কোনও আইনজীবী এই মামলা লড়তে চাননি। এরপরই, এলাহাবাদ হাইকোর্টের নির্দেশে মামলাটি গাজিয়াবাদ জেলা আদালতে স্থানান্তর করা হয়েছিল।
তিনটি মামলায় মোট ১২১ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। এরপরই গত শনিবার ওয়ালিউল্লাহকে দোষী বলে ঘোষণা করেছিলেন জেলা দায়রা বিচারক জিতেন্দ্র কুমার সিনহা। এই মামলায় অভিযুক্ত ছিল আরও তিন বাংলাদেশি জঙ্গি- জাকারিয়া, মুস্তাকিম এবং বশির। তবে, তারা দেশ ছেড়ে বাংলাদেশে চম্পট দিয়েছে বলে তাদের ধরা যায়নি।
তবে, ওয়ালিউল্লাহ পলিশের জালে ধরা পড়েছিল। সেই ছিল এই হামলার মুল ষড়যন্ত্রকারী। মামলার শুনানি চলাকালীন, হামলায় হতাহতদের পরিবারের সদস্যরা সাফ জানিয়েছিলেন, ওয়ালিউল্লাহকে মৃত্যুদণ্ড দিতে হবে। ফাঁসির থেকে কম কোনও সাজা দেওয়া হলে, তাঁরা মানবেন না বলে জানিয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত তাদের সেই দাবিই পূর্ণ হয়েছে।