খুঁটিপুজো কী ? কেনইবা একটা বাঁশকে দেবতা মনে করে পুজো করা হয়?   

খুঁটিপুজো কী ? কেনইবা একটা বাঁশকে দেবতা মনে করে পুজো করা হয়?   

যতদিন যাচ্ছে ততই এগিয়ে আসছে বাঙালির সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপুজো। প্রতি বছরেরে মতো নিয়ম মেনে  বিভিন্ন জায়গায় খুঁটিপুজো শুরু হয়ে গেছে রথের দিন থেকে।আর যুগ যুগ ধরে চলে আসছে এই রীতি । কিন্তু কী এই খুঁটিপুজো ?কেনইবা একটা সামান্য বাঁশকে এইরমভাবে পুজো করা হয়?  আসুন জেনে নেওয়া যাক … 

খুঁটি পুজো মানে  আপামর বাঙালির কাছে  মা দুর্গার আবাহন। এই পুজো আমাদেরকে বুঝিয়ে দেয় হাতে গোনা আর কয়েকটা দিন তারপরেই মা আসছেন মর্ত্যে।খুঁটি পুজোর ধারণাটি আসলে এসেছে প্রায় শত বছর পুরনো এক রীতি থেকে।  ঐতিহ্যশালী বনেদি পরিবার এবং ক্লাবগুলিতে প্রতিবছর আড়ম্বরের সঙ্গে খুঁটি পুজো করে। আগেকারদিনে বনেদি বাড়ির ঠাকুরদালানে  পুজো হত সাবেকি একচালার প্রতিমা।

রথযাত্রা  শুভদিনে প্রতিমার কাঠামোতে মাটি দিয়ে কারিগররা পুজোর শুভ সূচনা করতেন। সেই দিন থেকে  দুর্গা প্রতিমা নির্মাণের কাজ শুরু হত। কারিগরদের বিশ্বাস অনুযায়ী রথযাত্রার দিনে যোগমায়া দেবীর আবির্ভাব হয়েছিল। তাই সেই দিন দুর্গা প্রতিমা নির্মাণ কার্যের জন্য অত্যন্ত শুভ। প্রতিমার কাঠামোয় প্রথম মাটি স্পর্শ করার উপলক্ষেই সূচনা হয় খুঁটি পুজোর , এমনটাই ধারনা অনেকের ।  

তবে  এই খুঁটি পুজোর কোন বর্ণনা  পুরাণে সেভাবে নেই। কিন্তু খুঁটিপুজো বর্তমানে অন্যতম উৎসবে পরিনত হয়েছে। খুঁটিপুজো করে আসলে ইন্দ্রকে পুজো করা হয়৷ পশ্চিম মেদিনীপুরের বিভিন্ন জায়গায় এখনও খুঁটিকে ইন্দ্রজ্ঞানে পুজো করার রীতি  আছে৷পূর্ব বাংলায় খুঁটিপুজো বহুল প্রচলিত।   উড়িষ্যায় এই খুঁটিপুজোর চল রয়েছে।  যত দিন যাচ্ছে বেড়ে চলেছে খুঁটি পুজোর চাকচিক্য। আগের পুজো প্যান্ডেলের উদ্বোধনে দেখা যেত তারকা বা রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের। তবে বর্তমানে খুঁটি পুজোর দিন থেকেই বিভিন্ন  পুজো প্যান্ডেলগুলিতে বসে আমন্ত্রিত তারকাদের হাট। এই খুঁটি পুজোকে কেন্দ্র করে জনপ্রতিনিধি এবং  সেলিব্রিটিরাও সুযোগ পান জনসংযোগের।