ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় যশ' এর নামকরণের অর্থ কী?

ঈশিকা রুদ্র ইতিমধ্যে ঘটে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় তওকতের ফলে দুর্দশার কবলে পশ্চিম ভারত। তওকতের বিপর্যয় কাটতে না কাটতেই ধেয়ে আসতে চলেছে আরও এক ঘূর্ণিঝড় যার নাম দেওয়া হয়েছে 'যশ'। আবহাওয়া সূত্রে খবর উত্তর আন্দামান সাগরে গড়ে ওঠা ঘূর্ণিঝড় ২২ মে রূপ নেবে ঘূর্ণিঝড়ের। স্থলভাগের দিকে আগমন ঘটার ফলে ২৬ মে আছড়ে পড়তে পারে ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গের উপকূলে এই ঘূর্ণিঝড়।
এবারের এই ঘূর্ণিঝড়ের নাম রেখেছে ওমান দেশ। যশ শব্দের মানে হল হতাশা। আবহবিদদের মতে, ঝড় সম্পর্কে তথ্য বোঝার জন্য ঝড়ের নাম থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ঝড়ের নাম না দেওয়া থাকলে একই সময়ে একই সাগরে একাধিক ঝড় থাকলে সমস্যায় পড়তে হয়। ২০০০ সালে ওয়ার্ল্ড মেটেরোলজিক্যাল অরগানাইজেশন ও ইউনাইটেড নেশেনস ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল কমিশন ফর এশিয়ার সদস্য দেশগুলি নামকরন করতে শুরু করে।
ভারত, ইরান, বাংলাদেশ, মায়ানমার,মালদ্বীপ, কাতার, সৌদি আরব, শ্রীলঙ্কা, ওমান, পাকিস্তান, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, ইয়েমেন- এই ১৩ টি দেশ নিয়ে তৈরি হয়েছে এই কমিটি। এই ১৩ টি দেশ ১৩ টি করে নাম দেয়। সেই তালিকা থেকেই ঘূর্ণিঝড়ের নাম ঠিক করা হয়। আর তাওকত ঘূর্ণিঝড়ের পরের নামটি হল 'যশ'। সাইক্লোন যশের মোকাবিলা করতে একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকার।
উপকূলবর্তী এলাকাগুলো থেকে মানুষজনকে সরানোর পক্রিয়া শুরু করে দেওয়া হয়েছে। মৎস্যজীবীদের সমুদ্র থেকে ফিরে আসার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। উদ্ধারকারী দলকেও তৈরি থাকতে বলা হয়েছে। প্রশাসনের তরফ থেকে অনান্য পদক্ষেপ ও গ্ৰহন করা হয়েছে।এখনও পর্যন্ত নিম্নচাপতির যা অবস্থান তাতে পশ্চিমবঙ্গেই ঘূর্ণিঝড় ইয়াস-এর আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি।
এই সাইক্লোনটি উত্তরমুখী হয়ে ধেয়ে আসছে। ২৪ মে-র আগেই এই নিম্নচাপটি সাইক্লোনের চেহারা নেবে । ২৪ তারিখের পর ইয়াস সিভিয়ার সাইক্লোনের চেহারা নেবে। যেহেতু আমফানের চাইতে ইয়াস-এর আয়তন বড় তাই এই সাইক্লোনটি বড় আকারের ঘূর্ণিঝড়ের চেহারা নেওয়ার প্রবল আশঙ্কা রয়েছে। ২৭ তারিখ অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গে।'
সুজিব কর জানিয়েছেন, 'এই ইয়াস-এর ব্যাসার্ধ ৬০০ কিলোমিটার, অর্থাত্ ইয়াস প্রায় ১২০০ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে যাবে। ঝড়ের অভিমুখ যেহেতু উত্তরমুখী, তাই কলকাতার ওপর দিয়ে এই ইয়াস অতিক্রম করবে। এর ফলে কলকাতা, দুই ২৪ পরগনা, দুই মেদিনীপুর, হাওড়া, হুগলি,বর্ধমান, মুর্শিদাবাদ, মালদার ওপর দিয়ে ইয়াস অতিক্রম করবে। হওয়ার গতি ল্যান্ডফলের সময় ১৩০ থেকে ১৪৫ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টায় থাকলেও ১৬০ থেকে ১৮০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা গতিবেগ নিয়ে ইয়াস আছড়ে পড়বে দিঘা ও সাগরের মাঝামাঝি সমুদ্র্রের ওপর। যে হেতু আমফানের চাইতে ইয়াস-এর ব্যাস বেশি, তাই মনে করা হচ্ছে এই সাইক্লোনের তীব্রতা আমফানের চাইতে বেশি হবে।' তবে আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে আমফানের থেকে কম শক্তিশালী হবে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস।