লাসা কেন আজও নিষিদ্ধ নগরী হিসেবে পরিচিত?

লাসা কেন আজও নিষিদ্ধ নগরী হিসেবে পরিচিত?

ঈশিকা রুদ্র :    ৯ম শতাব্দী থেকে তিব্বতের ধর্মীয় কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ছিল লাসা। ১৬৪২ সালে এই নগরকে তিব্বতের রাজধানীর স্বীকৃতি দেওয়া হয়। চীন ও তিব্বতের কিছু মানুষ প্রায়ই তিব্বতকে নিজেদের অংশ বলে দাবি করত। কিছু কিছু তিব্বতীয় এই অঞ্চলকে চীনের অংশ মানতে রাজি নয়। ১৯৫১ সালে চীনা কমিউনিস্টরা অঞ্চলটিকে নিয়ন্ত্রণ করেছিল তখন লাসা তিব্বতের রাজধানী ছিল।

১৯৫৯ সালে তিব্বতিরা চীনের বিরুদ্ধে স্বাধীকার আন্দোলন শুরু করেছিল। ১৯৬৫ সালে লাসাকে তিব্বত  স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের রাজধানী ঘোষণা করা হয়। প্রাচীন মন্দির ও প্রাচীন স্থানগুলি তিব্বতের পবিত্র স্থান বলে বিবেচিত হয়। দালাই লামার শীতকালীন আবাস , বিভিন্ন মঠ এবং পোটলা  প্রাসাদ এখানকার কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থান। তিব্বতের প্রায় বাসিন্দা বৌদ্ধ ধর্মের অন্তর্ভুক্ত। তিব্বতের মোট জনসংখ্যা র বেশিরভাগই বাস করেন লাসায়।

এখানকার বাসীন্দারা খুব ই পরিশ্রমী। চীনের অধীনে হওয়ার পর থেকেই গোটা বিশ্বের কাছে তিব্বত নিষিদ্ধ দেশ এবং লাসা নিষিদ্ধ নগরী হিসেবে পরিচিত। বিশ্বের কোনো দেশ ইচ্ছা করলেও লাসায় আসতে পারে না। আসলে তিব্বতের পথ খুবই দুর্গম। প্রকৃতি চোখ ধাঁধিয়ে দিলেও সেখানে পৌঁছানো খুব কঠিন। বছরের আট মাস বরফে ঢাকা থাকে এই অঞ্চল।

তিব্বত মালভূমির দক্ষিণ দিকে পুরোটাই হিমালয় পর্বতমালায় ঘেরা। উওরে রয়েছে তাকলামাকান মালভূমি। উত্তর-পূর্ব দিকে রয়েছে কিলিয়ান  পর্বতমালা( এর অনেকটা উত্তরে গোবি মরুভূমি অবস্থিত)। এসব পেরিয়ে তিব্বতে আসা সত্যিই দুর্বিসহ। এই সমস্ত কারণে মানুষ তিব্বতকে এড়িয়ে চলে। আর একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হল তিব্বতের উচ্চতা।

তিব্বতের বেশিরভাগ ভূভাগ সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৬ হাজার ফুট উঁচুতে অবস্থিত। এই উচ্চতাই স্বাভাবিক শ্বাসপ্রশ্বাস  চালানো খুব কষ্টকর বাইরের জগতের মানুষের কাছে। লাসা এতই উচুঁ যে একে পৃথিবীর ছাদ ও বলা হয়। প্রাকৃতিক বাধা পেড়িয়ে যদি কেউ যাবার চেষ্টা করে সে ক্ষেত্রে ও সমস্যা দেখা যায়। এই শহরের আসতে গেলে দরকার আছে চীনের স্পেশাল পারমিশন। তবে সেই অনুমতি কেউ পেয়েছে বলে মনে হয় না। আকাশপথকেউ তিব্বতের ব্যবহার করতে দেওয়া হয় না। এই সকল কারনেই বিশ্বের মানুষের অদেখায় রয়ে গেছে লাসা।