ধনতেরসের যমদ্বিপ বা যমের প্রদীপ জ্বালানো হয় কেন??

ধনতেরসের যমদ্বিপ বা যমের প্রদীপ জ্বালানো হয় কেন??

দীপাবলি উত্সব ও কালীপূজো।এই দীপাবলি উতসবে মেতে ওঠে সকল সম্প্রদায়ের মানুষ ।দীপাবলির দু দিন আগে ধনতেরাস মানানো হয় ।সেই সময় সোনা ও রূপার জীনিস কেনা কে শুভ বলে মনে করা হয।ধনতেরসের দিন লক্ষী ও কুবেরের আরাধনা ও করা হয় ।পৌরাণিক কথা অনুযায়ী যে সময় লক্ষী দেবীর সাগর মন্থনে আবির্ভাব ঘটে সেই একই দিনে ভগবান ধনত্বরি ও অমৃত কলস হাতে সাগর মন্থনে আবির্ভূত হন।

লক্ষী সম্পদের দেবী কিন্তু তার কৃপা উপভোগের জন্য আমাদের স্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু আবশ্যক ।তাই লক্ষী দেবীকে আবাহন করার জন্য দুদিন আগে থেকে প্রদীপ জ্বালানো হয় । কিন্তু একটা প্রশ্ন হযতো সবার মাথায় আসে যে ধনত্বেরসের দিনে কেন সোনা কিংবা রূপোর জীনিস কেনা হয় ?

পৌরাণিক কথা অনুযায়ী কার্তিক মাসের কৃষ্ণপক্ষের ত্রযোদশ তিথির দিন ধন্বত্বরীর জন্ম হয় ।এই জন্য এই তীথি ধনতেরস তিথি নামেও পরিচিত।ওই দেবতার উত্থান কালে উনার হাতে অমৃতের কলসে পরিপূর্ণ ছিলো ।যেহেতু কলস হাতে নিয়ে আবির্ভূত হয়েছিলেন তাই এদিন নতুন বাসনপত্র কেনার ও রেয়াজ আছে।

লোককথা অনুযায়ী এদিন কোনো জিনিস কিনলে তার 13 গুণ বৃদ্ধি হয় ।

ধনতেরসের দিনে সোনার পাশাপাশি রূপো কেনার ও প্রচলন ও আছে।এর কারণ হলো রূপো চাঁদের একটি প্রতীক চাঁদ শান্তি প্রদান করে ও আমাদের মনকে শান্তি প্রদান করে।মনের সন্তুষ্টিকে পৃথিবীর বড়ো সম্পদ বলা হয় ।যাদের কাছে স্বাস্থ্য ও সন্তুষ্টি আছে তারাই হলো আসল সম্পদ শালী।
ধন্বত্বরীকে চিকিত্সার দেবতাও বলা হয় ।ধনতেরসের দিন নতুন সোনা বা জামা কাপড় ও কেনা হয় ।সুস্বাদু খাবার তৈরি ও রংগোলি তে ভরে ওঠে সকলের বাড়ি ।মাডোযারি সম্প্রদায়ের মানুষ রা ধনতেরসের দিন কুবের ও লক্ষীর পূজো করে।কারণ কুবের ও লক্ষী এদের সম্পদের রক্ষাকারী হিসেবে পূজিত করা হয় ।

এখন প্রশ্ন হল ধনতেরসের দিন কেন প্রদীপ বা যমদ্বীপ ধরানো হয় ।

এটার পিছনে এক পৌরাণিক কাহিনী আছে। হেম নামে এক রাজার 16 বছরের এক ছেলে ছিল। জন্ম পত্রিকাতে বিয়ের চতুর্থীর দিনে সাপের কামড়ে তার মৃত্যু হবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয় ।এর ভয়ে তার নববিবাহিত স্ত্রী তাকে সারাদিন ঘুমতে দেননি।।এবং নিজের সমস্ত মূল্য বান অলঙ্কার গুলো গেটের বাইরে একটি ডালিতে সাজিয়ে রাখলেন।ও তার চারপাশে প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখলেন।

এবং তার স্ত্রী সারাক্ষণ গান গাইতে থাকলে ।যাতে তার স্বামী না ঘুমিয়ে পড়ে ।সেই রাতে যখন মৃত্যুর দেবতা যম সাপ রূপে আসেন ।কিন্তু জ্বালানো প্রদীপের আলো ও অলঙ্কারের ছটায় তার চোখ ধাঁধিয়ে যায় ।তখন আর যমরাজ তার বাড়িতে প্রবেশ করতে পারেন না।তখন সাপ রূপ ধারী যম ওই ডালিতে সাজানো অলঙ্কারের উপর বিরাজমান হন।এবং বিবাহিতার এই অভ্যর্থনা পেযে সন্তুষ্ট হয়ে রাজকুমার কে জীবনদান দেন। এই জন্য আমাদের দীর্ঘায়ু ও যমরাজ কে সন্তুষ্টির জন্য ধনতেরসের দিন যম দ্বীপ জ্বালানোর ও রেওয়াজ রয়েছে ।