সমুদ্র-ঘেরা শিলাখণ্ড কিভাবে হয়ে উঠল ‘বিবেকানন্দ রক’? জানুন ১২৫ বছর আগের ঘটনা

আজবাংলা কন্যাকুমারী ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের কন্যাকুমারী জেলার অন্তর্গত একটি শহর। এই শহরটি ভারতের মূল ভূখণ্ডের দক্ষিণতম বিন্দুতে অবস্থিত। আজ কন্যাকুমারী একটি মূল স্থানের সম্মন্ধে আজ আপনাদের জানাবো | যা শুধু এই দেশের মানুষের কাছেই বিখ্যাত না সারা বিশ্বের মানুষের কাছে জনপ্রিয় ও বিখ্যাত |
এখানে জলের তিনটে রং। কারণ, তিনটে সাগর এসে মিশেছে হেথায়— আরব সাগর, বঙ্গোপসাগর আর ভারত মহাসাগর। ভারতের দক্ষিণতম এই প্রান্তের সৌন্দর্যের টানে যুগে যুগেই পর্যটকরা ভিড় জমান এই স্থানে। এখানেই সাধনা করে সিদ্ধি লাভ করেছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ। হ্যাঁ, ভারত মহাসাগরে সেই বিখ্যাত বিবেকানন্দ রকের কথাই বলছি |
একশো পঁচিশ বছর আগে ১৮৯২ সালের ২৫ ডিসেম্বর থেকে ২৭ ডিসেম্বর, টানা তিন দিন কন্যাকুমারীর সমুদ্র-ঘেরা শিলাখণ্ডে বসে ধ্যানমগ্ন হয়েছিলেন স্বামীজী | একশো পঁচিশ বছর আগে কন্যাকুমারীর মূল ভূখণ্ড থেকে পাঁচশো মিটার দূরের সমুদ্র সাঁতরে স্বামী বিবেকানন্দ ওখানে পৌঁছন | পৌঁছে টানা ৩দিন ধ্যান করেছিলেন স্বামীজী |
বিবেকানন্দ রক মেমোরিয়ালটি ভারতের কন্যাকুমারীর ভাওয়াতুরাইয়ের একটি জনপ্রিয় পর্যটন স্মৃতিস্তম্ভ। ১৯৭০ সালে স্বামীর স্মরণে গড়ে তোলা হয় প্রথিবী বিখ্যাত কন্যাকুমারী এই বিবেকানন্দ রক মেমোরিয়াল | লোকমুখে শোনা যায়, এই শিলার উপরেই দেবী কুমারী ভগবান শিবের ভক্তিতে তপস্যা করেছিলেন |
মাত্র ঊনচল্লিশ বছরের সংক্ষিপ্ত অথচ কর্মময় জীবন ছিল তাঁর৷ নরেন্দ্রনাথ দত্ত থেকে স্বামী বিবেকানন্দ হয়ে ওঠা পর্বের একটি বড়ো অংশই কেটেছে কলকাতায় ৷ এই শহরের বিভিন্ন বাড়ি, প্রতিষ্ঠান জুড়ে ছড়িয়ে আছে তাঁর স্মৃতি | আর তেমনি স্বামীজীর স্মৃতি ঘেরা এই বিবেকানন্দ রক |
ভারতকে বিশ্বের দরবারে যিনি প্রথম উপস্থাপন করেছিলেন ৷ ভারতের অস্থিত্ব প্রকাশ করেছিলেন তিনিই ভারতের প্রাণ স্বামী বিবেকানন্দ ৷ 'My dear brother and sister of America.' এই বাক্য আগে আমেরিকাবাসী সম্বন্ধে কেউই ভাই বা বোন বলে তাঁদের কেউই সম্বোধন করেননি ৷
এর অপার টান, ভালবাসার সম্পর্কর বন্ধন ৷ মানুষের প্রতি মানুষের সম্মানের বহিঃপ্রকাশ ৷ বিশ্বের দরবারে ভারতকে তুলে ধরা ৷ শিক্ষা, নারীকল্যাণ, সমাজ সংস্কার বিবেকানন্দ আমাদের চেতনার অন্যতম নাম ৷ তিনিই প্রথম ভারতবাসীকে অজ্ঞতার অন্ধকার থেকে চেতনার আলোয় নিয়ে গিয়েছেন ৷
শিকাগো বক্তৃতা সেরে ভারতে ফেরারসময়ে গুণীজনেরা বলেছিলেন এ কোনও সাধারণ মানুষের ঘরে ফেরা নয়, ভারতের প্রাণ যেন ভারতেই ফিরে এসেছে ৷ একবার বিদেশ থেকে ফিরেছিলেন যখন তখনই মার্গারেট নোবেলকে সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন ৷ সেই মার্গারেট নোবেলই পরবর্তী সময়ে ভগিনী নিবেদিতা রূপে সমাজ সংস্কার করেছিলেন ৷