আনন্দ নয় বিপদের প্রতীক এই সোনালি বাঘ! জানাল কাজিরাঙা

আজ বাংলা: কিছুদিন আগেই অসমের কাজিরাঙা ন্যাশনাল পার্কে তোলা একটি বাঘের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল হয়ে যায়। সকলেই এই ছবি দেখে আনন্দে উচ্ছসিত হয়ে পড়েন। তখন আইএফএস অফিসার পরভীন কাসওয়ানের শেয়ার করা ছবিতে হালকা হলুদ রঙের একটি বাঘ দেখা যায়। তবে কাজিরাঙায় এই সোনালি বাঘের দেখা মেলায় তাতে আনন্দের বিশেষ কিছু নেই বলে জানালেন বন আধিকারিকরা।
এই সোনালি বাঘকে বিপন্নতার প্রতীক হিসেবেই চিহ্নিত করেছেন তাঁরা। কাজিরাঙায় এই ধরনের রঙের আরও তিনটি বাঘ আছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা। বাঘেদের ভবিষ্যত্ নিয়ে বিচার করলে সোনালি বাঘের দেখা মেলায় উচ্ছ্বসিত হওয়ার কোনও কারণ নেই বে জানিয়েছে কাজিরাঙা কর্তৃপক্ষ। বাঘেদের সংখ্যা কমে আসায় একেবারে অতি ঘনিষ্ঠ নিজস্ব গোষ্ঠীর মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত মিলনের ফলে এই ধরনের বাঘের জন্ম বলে মনে করছেন তাঁরা। বাঘের সংখ্যা কমে যাওয়াই এই ধরনের সোনালি বাঘের উত্পত্তির কারণ বলে জানানো হয়েছে।
কাজিরাঙা ব্যাঘ্র সংরক্ষণ প্রকল্পের রিসার্চ অফিসার রবিন শর্মা জানিয়েছেন, ‘এই রকম অন্য ধরনের রঙের বাঘের জন্মের বায়োলজিক্যাল কারণ হল মাত্রাতিরিক্ত ইনব্রিডিং। অর্থাত্ নিজস্ব গোষ্ঠীর মধ্যেই মিলনের ফলে সন্তানের জন্ম হলে যে জিনগত সমস্যা দেখা দিতে পারে, এই ক্ষেত্রেও সেটাই হয়েছে।’
কাজিরাঙা ন্যাশনাল পার্কের ডিরেক্টর পি শিবকুমার একটি ডকুমেন্ট তুলে ধরেছেন। সেখানে বলা হয়েছে যে হালকা হলুদ রঙের হালকা কালো ডোরার এই বাঘের ছবি সর্বপ্রথম ২০১৪ সালে কাজিরাঙায় তোলা হয়। পরে ২০১৫, ২০১৬, ২০১৭-তেও এই বাঘটি ক্যামেরাবন্দি হয়।
উল্লেখ্য, এই সোনালি বাঘের ছবিটি যিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেন, সেই আইএফএস অফিসার পরভীন কাসওয়ান অবশ্য দাবি করেছেন যে এই ছবিটি এই বছর এপ্রিল মাসে মুম্বইয়ের ওয়াইল্ড লাইফ ফটোগ্রাফার ময়ুরেশ হেন্দ্রে তোলেন।
এদিকে ওয়াইল্ড লাইফ বায়োলজিস্ট কমল আজাদ জানিয়েছেন যে ২০১৪ সালে এই বাঘের ছবি যখন প্রথম তোলা হয়, তখন তার বয়স ছিল দুই। অর্থাত্ বর্তমানে বাঘটির বয়স সাত-আট বছর। একটি বাঘিনি তিন-চার বছর বয়সে সন্তানের জন্ম দেয়। তার মানে এই বাঘিনি এতদিনে নিশ্চয় সন্তানের জন্ম দিয়েছে। তার সন্তানদের মধ্যেও এই সোনালি ছটা আছে, কিনা সেটাই এখন দেখার।