উন্নত বিশ্বের অনেক দেশেই বোরকা বা হিজাব পড়া নিষিদ্ধ

অমুসলিম মহিলাকে ইরানে বলপূর্বক বাধ্য করা হচ্ছিল মাথায় বোরকা বা হিজাব চাপিয়ে নিতে। অমুসলিম হয়ে ইসলামিক পোশাক গ্রহণ করতে অনীহা প্রকাশ করায় নানাবিধ জটিলতার স্বীকার হতে হয়েছিল। বিশ্বের অনেক দেশেই বোরকা বা হিজাব নিষিদ্ধ করা হয়েছে। উন্নত বিশ্বের মতে বোরকা বা হিজাব এমন একটি পোশাক যা নারী স্বাধীনতার অন্তরায়। অন্যদিকে বোরকা বা হিজাব পক্ষের যুক্তি হচ্ছে যে কোনো ধরনের পোশাক পড়া মানুষের ব্যক্তিগত অধিকার।
ফ্রান্স ২০১১ সালে প্রথম বোরকা বা হিজাব নিষিদ্ধ করে ফ্রান্স। ফ্রান্সে বোরখা বা নেকাব পড়লে জরিমানার বিধান রয়েছে। ইউরোপে সর্বপ্রর্বথম ফ্রান্সই বোরকার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। ২০১৫ সালে বোরকা বা হিজাব পরার কারণে প্রায় ১৫০০ ব্যক্তির উপর অর্থদর্থণ্ডের ঘটনা ঘটে। ২০১৫ সালের নভে ম্বরে প্যারিস হামলার পর ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী ম্যানুয়েল ভলস বিশ্ববিদ্যালয়ে মুসলিম নারীদের বোরকা বা হিজাব নিষিদ্ধের আহ্বান জানিয়েছিলেন। এরপর থেকে ওই দেশের স্কুল ও সরকারি অফিসে বোরকা বা হিজাব এবং যেকোনো ধরনের ধর্মীয় পোশাক পরা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
ইতালি ইতালির বেশ কয়েকটি শহরে বোরকা বা হিজাব নিষিদ্ধ। ইতালির উত্তর পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর নোভারায় কর্তৃপর্তৃ ক্ষ আইন করে বোরকা বা হিজাব নিষিদ্ধ করেছে। ভিরাল্লো স্যাজিয়া শহরের মেয়র ‘বুরকিনি’র (মুসলমানদের সাঁতা সাঁ রের পোশাক) ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। ৭০-এর দশকেই মুখ ঢেকে রাখা সব ধরনের ইসলামিক পোশাকের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ইতালি।
রাশিয়া রাশিয়ার স্ট্রাভাপুল শহরে প্রায় ২.৭ মিলিয়ন লোকের বাস। এর ১০ শতাংশ মুসলমান। যদিও এর সংখ্যা অনেক বেশি তবুও এই শহরের সব স্কুলে বোরকা বা হিজাব নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
বেলজিয়াম ২০১১ সাল থেকে বেলজিয়ামে বোরকা বা হিজাব নিষিদ্ধ। অর্থা ৎর্থা কোন নারী মুখ ঢেকে কিছু পড়তে পারবে না। সেখানকার আইন অনুযায়ী বোরকা বা হিজাব পরলে জরিমানাসহ ৭ দিনের জেলও হতে পারে।
নেদারল্যান্ডস নেদারল্যান্ডস ২০১৫ সালে আইন করে বোরকা নিষিদ্ধ করে। বিশেষ করে জনসমক্ষে, অর্থা ৎর্থা স্কুল, হাসপাতাল ইত্যাদির মতো জায়গায বোরকা ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। আংশিক নিষেধাজ্ঞা কার্যকরর্য করেছে ডাচ সরকার। আইন না মানলে থাকছে ৩শ ইউরো পর্যন্তর্য জরিমানা ।
অস্ট্রিয়া দেশটির ক্ষমতাসীন জোট সরকার প্রকাশ্য স্থানে পুরো মুখ ঢাকা নেকাব নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে একমত হয়েছে। স্কুল-কলেজ, অফিস-আদালতে নেকাব পরার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করতে একমত হয়েছে সরকারের শরিক দলগুলোও। এ ছাড়া যারা সরকারি চাকরি করেন, তাদের মাথায় স্কার্ফ, হিজাব কিংবা অন্যান্য ধর্মীয় প্রতীক পরার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথাও বিবেচনা করছে সরকার৷
সুইজারল্যান্ড সুইজারল্যান্ডে কিছু অঞ্চলেও জনসমক্ষে নিকাব পরা নিষিদ্ধ।
ক্যামেরুন ২০১৫ সালে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন বোকোহারামের ২টি আত্মঘাতী হামলার পর উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলের সরকার পুরো মুখ ঢেকে বোরকা পরা নিষিদ্ধ করেছে। ওই হামলা দুটোয় ১৩ জন নিহত হয়।
স্পেন ২০১৪ সালে রেওস শহরে বোরকা ও হিজাব পরার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে সে দেশের সরকার। যদিও স্পেনের সংবিধানে থাকা ধর্মীয় স্বাধীনতার নিয়ম অনুযায়ী এই আইন কাজ করবে না।বোরকা বা হিজাব ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে স্পেনের অন্যতম শহর বার্সেলর্সেনায়। মিসর সরকার যে আইন করার কাজ করছে, তাতে বোরকা বা হিজাব জাতীয় কোনো পোশাক পাবলিক প্লেসে পরা যাবে না।
সিরিয়া সিরিয়ায় ২০১০ সাল থেকে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা আছে বোরকা ও হিজাবের ওপর। বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় কেউ হিজাব বা বোরকা পরে থাকতে পারবে না।
ইন্দোনেশিয়া হিজাব নিষিদ্ধ করার মতো কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে ইন্দোনেশিয়ায়। সে দেশের অধিকাংশ মানুষ ইসলাম ধর্মের অনুসারী। বিশ্বের মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলির মধ্যে অন্যতম হচ্ছে এই ইন্দোনেশিয়া। সেই দেশেই হিজাবের উপরে নিষেধাজ্ঞা চাপানো হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে।
ব্রিটেন ব্রিটেনে প্রচুর মুসলিমের বাস। তাই সেখানে কোনো ইসলামী পোশাকের ওপর নিষেধাজ্ঞা নেই৷ তবে স্কুলগুলোতে নির্দিষ্ট পোশাক পরতে হয়। ২০০৭ সালে বেশ কয়েকটি মামলার পর স্কুল কর্তৃপক্ষ ঠিক করে, স্কুলে কেউ বোরকা বা নেকাব পরতে পারবে না।