চাকরির দুনিয়ায় আপনি ফিট, যদি থাকে এই বিশেষ গুন

আজবাংলা যত দিন যাচ্ছে, অর্থনৈতিক মন্দার ছবিটা আরও যেন প্রকট হয়ে উঠছে। খবরের কাগজে রোজই নিত্যনতুন কর্মীছাঁটাই, সংস্থা বন্ধ হয়ে যাওয়ার খবর লেগেই আছে। এরকম পরিস্থিতিতে নিজের চাকরিটা বজায় থাকবে কিনা ভেবে সেই ভেবেই অস্থির অনেকেই।
আসলে দেশ তথা বিশ্বজোড়া করোনা অতিমারীর এই দাপটে কতটা বদলে যাবে আমাদের চেনা দুনিয়াটা, এ ব্যাপারে নিশ্চিত নন কেউই। করোনার কারনে, কর্মক্ষেত্র পালটে যাবে, বদলাবে কাজের ধরন। নতুন সেই কর্মসংস্কৃতিতে টিকে থাকতে হলে বদলে ফেলতে হবে কাজ করার স্টাইল, বাড়াতে হবে দক্ষতা।
আসুন আজকের প্রতিবেদনে দেখে নেব কি করে চাকরীর বাজারের নিজে টিকে থাকতে পারবো-
১. বিশ্লেষণ ক্ষমতা- সৃজনশীলতার পাশাপাশি বিশ্লেষণী ক্ষমতাও খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে চলেছে লকডাউন পরবর্তী জগতে। অতিমারীর পর যেহেতু আগের অনেক ধারণাই বদলে যাবে, তাই কোনও নতুন ধারণা বা পদ্ধতি কতটা উপযুক্ত হবে, তা বিশ্লেষণ করতেই হবে। প্রাপ্ত তথ্যের বিশ্লেষণ, দূরদর্শিতা, নিরপেক্ষ ও যুক্তিসঙ্গতভাবে ভাবার ক্ষমতা, এ সবই জরুরি আগামী দিনগুলোয়।
২. নিত্য নতুন দক্ষতা- একটা সহজ উদাহরণ দিই। ধরুন আপনি কোনও একটা কাজ খুব ভালো পারেন। কিন্তু ওই একটা কাজের জন্য আপনার চাকরিতে টিকে থাকার সম্ভাবনা খুব উজ্জ্বল নয়। কিন্তু যদি আপনি তিনরকমের কাজ খুব ভালো পারেন, তা হলে?
সে ক্ষেত্রে কিন্তু আপনাকে দিয়েই তিনজন আলাদা কর্মীর কাজ তুলে নেওয়া সম্ভব সংস্থার পক্ষে! স্বাভাবিকভাবেই সংস্থার চোখে আপনার গুরুত্বও বেশি! তাই একটা কাজে নিজেকে বন্দি করে রাখবেন না, নতুন নতুন দক্ষতা অর্জনের দিকে মন দিন, অনলাইন কোর্সে ভর্তি হোন। তাতে আপনার দক্ষতা বাড়বে, আত্মবিশ্বাসও।
৩. মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা- লকডাউন শেষ হওয়ার পরেও অনেক অফিস ওয়ার্ক ফ্রম হোমের সংস্কৃতি চালিয়ে যাবে। এ ছাড়াও কাজের সময় আর কর্মপদ্ধতিতেও নানা পরিবর্তন আসতে পারে। হয়তো কিছু কিছু কাজের দরকার আর থাকবে না, সে জায়গায় নতুন ধরনের কাজ করতে হবে।
এই গোটা পরিবর্তন মেনে নেওয়া ও তার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা ও মানসিকতা আপনার থাকতেই হবে। একমাত্র তা হলেই যুদ্ধ পরিস্থিতিতে টিকে থাকতে পারবেন আপনি।
৪. নেতৃত্ব দানের ক্ষমতা- আপনি কি অনেককে একটা লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে অনুপ্রাণিত করতে পারেন? যুক্তিনির্ভর হয়ে অথচ মানবিকভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে আপনার? সহকর্মীদের মধ্যে থেকে সেরাটা বের করে আনার ক্ষমতা রাখেন?
তা হলে নিশ্চিতভাবেই আপনার মধ্যে নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে এবং লকডাউন পরবর্তী প্রতিযোগিতামূলক কর্মজগতে এটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় গুণ। এই গুণগুলো ভালো করে ঘষেমেজে চর্চা করুন, সাফল্য সারাজীবন আপনার সঙ্গে থাকবে।
৫. প্রযুক্তির সঙ্গে বন্ধুত্ব- অনেক কাজই অদূর ভবিষ্যতে অটোমেটেড হয়ে যাবে, প্রযুক্তির বদল ঘটবে, নিত্যনতুন প্রযুক্তির প্রয়োগও হবে। সে সব প্রযুক্তি যদি চটপট শিখে নিতে না পারেন, চাকরির বাজারে আপনি কিন্তু আনফিট! কাজেই প্রযুক্তির সঙ্গে যদি বন্ধুত্ব না থাকে, এখন থেকেই তা করার সময় এসেছে!
৬. সৃজনশীলতা- ভবিষ্যৎ যতই প্রযুক্তিনির্ভর হোক, মনে রাখতে হবে যন্ত্র কখনও মানুষকে ছাপিয়ে যেতে পারে না! তাই সৃজনশীলতা, নতুন অভিনব ভাবনাচিন্তা কখনওই পুরোনো হওয়ার নয়। নতুনভাবে কাজ করা, নতুন আইডিয়া, এ সবই চিরন্তন। আপনার মধ্যেও যদি সৃজনশীলতা থেকে থাকে, তা হলে শান দিতে শুরু করুন সেই গুণটায়।