দাঁতে কালো ছোপ ? কীভাবে দূর করবেন দেখে নিন

আজ বাংলা: রোজকার জীবনে অনেকেই নানা সমস্যায় ভোগেন। তার মধ্যে অন্যতম হল দাঁতে কালো ছোপ। ভালো ভালো জামা, প্রসাধনী সবই আছে কিন্তু আপনি হাসলেই হয়তো খারাপ লাগছে। ঘরোয়া কিছু টোটকা জানলেই হয়ে যাবে আপনার দাঁত একেবারে মুক্তোর মতো চকচকে। অনেকেরই মুখে দুর্গন্ধ হয়। আর কথা বললে সেই গন্ধ বাকিদের সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। দাঁতের সমস্যা কিন্তু কমিয়ে দেয় আত্মবিশ্বাসও। আর দাঁত ভাল রাখতে বিশেষজ্ঞরা প্রথমেই বলছেন ভালো করে দাঁত ব্রাশ করতে হবে। দুবেলা খাওয়ার পর ব্রাশ করতে পারলে আরও ভালো।
এতে খাবারের কোনও টুকরো দাঁতের ফাঁকে আটকে থাকে না। আর যার ফলে মুখে কোনও রকম গন্ধও হয় না।ডার্ক চকোলেট, বিট, গাজর বেশি খেলে দাঁতে ছোপ পড়তে পারে। রোজকার ডায়েটে ভিনিগার সহ প্রচুর সাইট্রাস অর্থাৎ টকজাতীয় খাবার থাকলে দাঁতের এনামেল ক্ষয়ে গিয়ে দাঁতে ছোপ ধরে যায়। অনেক সময় বেশি ওষুধ খেলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে দাঁতে কালো ছোপ পড়তে পারে। চোট লেগে দাঁতের রঙ বদলে কালচে বা নীলচে হয়ে গেলে দ্রুত চিকিৎসা করানো দরকার। ব্যথা থাকে না বলে কেউই প্রথমে খেয়াল করেন না।
কিন্তু পরবর্তী কালে দাঁতের রঙ পাল্টে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোগান্তিও কম হয় না। অনেকের দাত খোঁচানোর অভ্যেস থাকে। কিন্তু এই অভ্যাস থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। কারণ এখান থেকে মাড়িতে জটিল কোনও ইনফেকশন হতে পারে। আসতে পারে আরও নানাবিধ সমস্যা।
তাহলে দেখে নিন কি কি সেই উপায়...
দিনে অন্তত দু’বার দাঁত মাজুন ৷ দাঁত মাজার সময় উষ্ণজল ব্যবহার করুন ৷ দাঁত মাজার সময় ব্রাশের স্ট্রোক রাখুন উপর-নীচে ৷ব্রাশ করা হয়ে গেলে ভালো করে মুখ ধুয়ে ফেলুন ৷ চা, কফি ক্যাফিনযুক্ত পানীয় খাওয়ার পর মুখ ঢুয়ে নিন ৷ পকেটে চুইয়িং গাম রাখুন৷ সুযোগ ফেলেই মুখে ফেলুন ৷ লাঞ্চ বা ডিনার করার পর চুইয়িংগাম চিবিয়ে নিতে পারেন।
রাতে শোবার আগে অবশ্যই দাঁত ব্রাশ করুন ৷ ফ্লশ ব্যবহার করতে ভুলবেন না ৷ রোজ একটা করে আপেল খান ৷ এতে দাঁত ভালো ও ঝকঝকে থাকবে ৷ সপ্তাহে একদিন টমেটো দিয়ে দাঁত মাজুন ৷ চটজলদি ঝকঝকে দাঁত পেতে হলে, ব্রাশের মধ্যে খাবার সোডা নিয়ে দাঁত ব্রাশ করুন৷ উষ্ণজলে মুখ ধুয়ে নিন৷এছাড়া ব্রাশ করার পর হালকা হাতে দাঁতের মাড়ি মাসাজ করতে ভুলবেন না ৷ প্রচুর পরিমাণে জল খান৷চকোলেট, মিষ্টি জাতীয় খাবারের পর মুখ ধুয়ে নিন ৷
তবে ঘরোয়া পদ্ধতিতেও দূর করতে পারেন দাঁতের হলুদ ছোপ
যেমন খাবার সোডা দিয়ে সপ্তাহে তিনদিন দাঁত ঘষুন। দেখবেন এখদম ঝকঝক করছে।লেবু খাওয়ার পর সেই খোসা ফেলে না দিয়ে ভালো করে দাঁতে ঘষে নিন। এতেও অনেক ময়লা কেটে যাবে। দাত থাকবে একদম চকচকে। এছাড়াও মুখে জল নিয়ে বারবার কুলকুচি করতে হবে। তাতে যদি কোনও খাবারের কণা আটকেও থাকে তা সহজে দূর হয়ে যাবে।
আর সেই কুলকুচি যদি ইষদুষ্ণ গরম জলে একটু নুন ফেলে করতে পারেন তাহলে আরও ভালো। নিয়মিত সিগারেট, বিড়ি বা পানমশলা জাতীয় কিছু খাওয়ার অভ্যেস থাকলে এমনিই মুখে গন্ধ হয়। মাড়ির সমস্যা, দাঁত হলুদ হয়ে যাওয়া এসব হয়। এখান থেকে মুখে ইনফেকশন, এমনকী ক্যানসারও হতে পারে। তাই সুস্থ থাকতে এগুলি এড়িয়ে চলতেই হবে। আর সিগারেট খেলে বারবার মুখ ধোওয়া, মাউথ ফ্রেশনার এসব ব্যবহার করতে হবে। স্কেলিং করলে দাঁতের হলুদ ভাব চলে যায় ঠিকই, কিন্তু একের বেশিবার স্কেলিং করা ঠিক নয়।
এতে দাঁতের অ্যানামেল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অনেক সময় জলে আয়রনের কারণেও দাঁতে লালচে হলুদ ছোপ পড়ে। সেক্ষেত্রে একাধিকবার ব্রাশ করা আর পাতি লেবুর খোসা ঘষলেও যাবতীয় দাগ মিলিয়ে যায়। কলার খোসার সাদা দিকটি নিয়মিত দাঁতে ঘোষলে দাঁতের হলদেটে ভাব দ্রুত কেটে যায়। তবে কলার খোসা দিয়ে দাঁত ঘষার পর অবশ্যই হলকা গরম জল দিয়ে ভাল করে কুলকুচি করে নিতে হবে। তুলসি পাতা দাঁতের স্বাস্থ্যের পক্ষে বেশ উপকারী। বেশি করে তুলসি পাতা নিয়ে সেগুলিকে রোদে শুকিয়ে নিতে হবে। পাতাগুলো একেবারে শুকিয়ে গেলে সেগুলিকে গুঁড়ো করে যে কোনও টুথপেস্ট মিশিয়ে নিয়মিত ব্রাশ করলে দাঁতের হলুদ ভাব একেবারে চলে যায়। সেই সঙ্গে দাঁতে বিভিন্ন রোগের সম্ভাবনাও কমে।